নওগাঁ প্রতিনিধিঃ নওগাঁর রাণীনগরে দিনের বেলায় এক যৌনকর্মীকে বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে বাড়ির মালিকের ২শ’ টাকা অর্থদণ্ড করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল মামুন। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার একডালা ইউনিয়নের যাত্রাপুর গ্রামে।
যাত্রাপুরগ্রামের মৃত-আলহাজ্ব আয়েরুল্লাহর ছেলে ফরহাদ আলী ফরু ওই যৌনকর্মীকে তার বাড়িতে আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে নির্বাহী কর্মকর্তা তার এই অর্থদণ্ড করেন।
ফরুর স্ত্রী জানান, দীর্ঘদিন যাবত যাত্রাপুর পুলিশ ফাঁড়ির একাধিক সদস্য স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির মাধ্যমে নুপুর নামের ওই মেয়েকে জোরপূর্বক তার বাড়িতে রেখে মেলামেশা করে আসছিলো। তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিকেলে ওই মেয়েকে এনে তার স্বামী ফরুর সহযোগিতায় তার বাড়িতে আশ্রয় দেয়। এই বিষয়ে সে একাধিকবার প্রতিবাদ করেও কোন ফল পায়নি।
তারা তাদের ইচ্ছে মাফিক ওই মেয়েকে নিয়ে আসে এবং গান-বাজনা করে আনন্দ ফ’র্তি করে। শুধু পুলিশ সদস্যরাই নয় স্থানীয় আরো কিছু ব্যক্তিরাও এই মেয়ের কাছে আসতো। এতে করে প্রতিবেশিরাও একাধিকবার প্রতিবাদ করে কোন ফল পায়নি বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই জানান, স্থানীয় কতিপয় ব্যক্তির সহযোগিতায় ফরু অর্থের লোভে তার বাড়িকে অঘোষিত যৌনপল্লী তৈরি করেছে। বিশেষ করে ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যদের ভয়ে স্থানীয়রা কোন কিছুই করতে পারেনি। তারা ফরুর বাড়িতে ওই মেয়েকে এনে গান-বাজনা আর আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে পড়তো। আমরা একাধিকবার প্রতিবাদ করেও কোন লাভ পাইনি।
যৌনকর্মী নুপুর বলেন, তিনি অভাবের তাড়নায় এই ব্যবসা করে আসছেন। যাত্রাপুরগ্রামের কতিপয় ব্যক্তির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে তিনি এই কাজ করে আসছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি এই বাড়িতে যাওয়া-আসা করছেন। কখনো ১দিন আবার কখনো একাধিক দিনও তিনি এই বাড়িতেই অবস্থান করেছেন বলেও জানান।
রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহুরুল হক বলেন বিষয়টি আগে আমার জানা ছিলো না। এখন জানলাম। যদি কোন পুলিশ সদস্য এই বিষয়ের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে অবশ্যই তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আল মামুন বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় বাড়ির মালিকের অর্থদন্ড করা হয়েছে আর এই এলাকায় না আসার শর্তে মেয়েটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।